নিজ আভায় আলোকিত এঞ্জেল প্রভা

সাকিব আল রোমান : এঞ্জেল প্রভা। একজন নারী উদ্যোক্তা। বহুগুণে গুনান্নিত রমণী। নিজেকে নিয়ে গেছেন এক অনন্য উচ্চতায়। খেলাধূলায়ও কম যাননি উদ্যোক্তা। আর্চার, হ্যান্ডবল ফেডারেশনেও যুক্ত ছিলেন তিনি। অন্যদিকে রোভারের স্কাউট সদস্যও বটে! তবে এগিয়ে চলার চেতনায় লক্ষ ছিল বিজয়ের। বর্তমান তিনি 'ড্রেসিং টেবিল' (ফেসবুক গ্রুপ), প্রভা'স ক্লোসেট (বুটিক্স পেজ) ও প্রভা'স মেকওভার এন্ড বিউটি পার্লার নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। 

এই নারী উদ্যোক্তা বলেন, আমার পার্লার (প্রভা'স মেকওভার এন্ড বিউটি পার্লার) ২০০৭ সালে যাত্রা শুরু করে। একটা সময় মা নিজেই দেখাশোনা করতো। পরবর্তীতে আমাকে (২০১২ সালে) দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়া হয়। তবে ডিজে দুনিয়ায় পা বাড়ানোর পরেই চোখ আটকে যায়, তারপর প্রেমের হামাগুড়ি শুরু ও অবশেষে পার্লারের দায়িত্ব পাবার পরে উক্ত বছরই বিয়ে সম্পন্ন করি। ২০১৬ সালে প্রথম সন্তানের মা হই। আমার ছেলের নাম মাঞ্জার, বলা চলে মাঞ্জারের মা হিসেবেই এখন পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি।

তিনি বলেন, সম্প্রতি বেশ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। এখন মোটামুটি সুস্থ আছি আলহামদুলিল্লাহ্। আমি আসলে সর্বদা হই হোল্লড়ের মাঝে থাকতে পছন্দ করি। বিয়ের পরে একটা সময় যখন মা হওয়ার স্বাদ উপভোগ করছিলাম তখন কিছুটা একাকিত্বও গ্রাস করে আমাকে। তখন (২০১৫ সাল) সময় কাটাতেই ফেসবুকে গ্রুপ চালু করেছিলাম। যার নামকরণ করি 'ড্রেসিং টেবিল'। নামটির মাঝে অনেক রহস্য লুকায়িত ছিল একটা সময় যদিও এখন প্রায় অনেকেই জেনে গেছে।

তবুও যারা না শুনেছে বা মিস করেছে তাদের জন্য বলছি, মেয়েরা সাজগোজ সবচেয়ে বেশী পছন্দ করে। আর সাজতে গেলে প্রথমত ড্রেসিংটেবিলে যেয়ে নিজেকে একবার দেখে নেয়। অথবা, সাজার পরে ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাড়িয়ে নিজেকে দেখে স্বপ্নের আকাশে মেঘের ভেলায় ঘুরে আসে একপলক। সেই ভাবনা থেকেই 'ড্রেসিং টেবিল' গ্রুপের পথচলা শুরু।

ড্রেসিং টেবিল গ্রুফ ও প্রভা’স মেকওভার এন্ড বিউটি পার্লার দিয়ে রূপচর্চায় মনোনিবেস করা মেয়েদের হৃদয়ে শক্ত স্থান করে বসেছেন এঞ্জেল প্রভা। এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমি সর্বদা চেষ্টা করি নিজেরে সেরাটা দিয়ে আরেকজনকেও সেরা উপহার দিতে। আমার পার্লারে যারা সাজতে আসে তারা হতাশ হয়ে ফিরেছে এমনটা শুনিনি এখনো।

তিনি বলেন, আমি সর্বদা চেষ্টা করি সবার সাথে মিলেমিশে এগিয়ে যাওয়ার। আমাদের সমাজে যারা পিছিয়ে পড়েছে তাদেরও খুশী করে মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা করি। আপনারা হয়তো জানেন, আমার পার্লার থেকে হতদরিদ্র পরিবারের কোন কন্যার বিয়ের জন্য যদি সাজতে ইচ্ছা প্রকাশ করে তবে সেটা আমি ফ্রীতেই করে দেই।

মেকওভার প্রিয় রমণীদের নিয়ে এই গুণী বলেন, নিজের চিরচেনা ধারাটা ভেঙ্গে বেরিয়ে এসে নিজেকেই নতুন করে দেখার বিষয়টা সত্যিই মজাদার হবে। একটা খোঁপা বা কোঁকড়ানো কেশসজ্জা করে, অথবা কখনো মুখে কিছুটা মেকআপ চড়িয়েই “মেকওভার করলাম” বলাটা ইদানিং বাতিকে রূপ নিয়েছে। কিন্তু আসলেই কি যেকোন অনুষ্ঠানের জন্য একটু গুছিয়ে তৈরি হওয়া এবং সাজাটাই মেকওভার? আপনার চিরায়ত সাজগোজের আয়োজনকে মেকওভার ভেবে নেবেন না।

প্রভা বলেন, মেকওভার এমন একটা বিষয় যা আপনি একদিনের জন্যেও ধারণ করতে পারেন, আবার চাইলে বেশ অনেকদিনের জন্যেও সেটা তুলে আনতে পারেন নিজের মধ্যে। সেটাও পুরোপুরি আপনার ইচ্ছা বা দরকার মতন হতে পারবে। আপনার ইচ্ছা অথবা কোন উৎসবের প্রয়োজনে নিজেকে সাজাতে পারেন সম্পূর্ণ নতুন কোন ভঙ্গিমায়।

ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে প্রভা বলেন, ভবিষ্যত বলতে এখন তো সন্তান (মাঞ্জার) আগে। এর বাইরে খুব একটা ভাবা হয় না। যা ভাগ্যে আছে তা হবে, তবে নিজের উপর আগের চেয়ে একটু সতর্ক। দেখা যাক কতদূর যাওয়া যায়। থেমে যাওয়ার মত ভাবনা এখনো ভাবা হয়নি। শুরু আর শেষ যে করার সে যতদিন সুযোগ দেয় আমি নিত্যনতুন কিছু করার ট্রাই করে যাবো।

Post a Comment

0 Comments