বাংলাদেশে বন্ধ হলো পাবজি গেম

বর্তমান সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় অনলাইন গেম প্লেয়ার আননোন’স ব্যাটলগ্রাউন্ডস (পাবজি)। গেমটি এবার নিষিদ্ধ ঘোষণা করল বাংলাদেশ। গেমটির সহিংস বিষয়বস্তু শিক্ষার্থীদের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে এমন এমন আশঙ্কা থেকে গেমটি নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছে ডিএমপির সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগ।

পাবজির পাশাপাশি কল অব ডিউটি, রেডিট, পাবজি লাইট গেমটিও বন্ধ করা হয়েছে।

অনলাইনে একাধিক ব্যক্তি মিলে খেলতে হয় এ গেম। একটি নির্জন দ্বীপে অন্যদের হত্যা করে নিজেকে টিকে থাকতে হয় গেমটিতে। শেষ পর্যন্ত যে ব্যক্তি বা দল জীবিত থাকে, সে-ই বিজয়ী হয়। বাংলাদেশের তরুণ সমাজ এ গেম খেলার ফলে নেতিবাচকভাবে আসক্ত হচ্ছে, এমন সন্দেহে গত কয়েক মাস ধরে পাবজি বন্ধের আলোচনা চলছিল। বলে  পাবজির পাশাপাশি কল অব ডিউটি, রেডিট, পাবজি লাইট গেমটিও বন্ধ করা হয়েছে।

অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে গেমটি বাংলাদেশে খেলতে সমস্যা হচ্ছিল বলে অনেক গেমার ফেসবুকে পোস্ট দেন। বর্তমানে বাংলাদেশি সার্ভার ব্যবহার করে গেমটিতে ঢোকা যাচ্ছে না।

পুলিশের সাইবার ক্রাইম বিভাগের এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবকদের থেকে অসংখ্য অভিযোগ পাওয়ার পর গেমটি বাংলাদেশ থেকে খেলা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। গেমটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে সহিংসতা ঢুকিয়ে দিচ্ছে। একই সঙ্গে পড়াশোনা থেকে শিক্ষার্থীদের মনোযোগও কমিয়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ তাদের।’

ডিএমপির সাইবার সিকিউরি অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, 'আমরা সরকারিভাবে শুধুমাত্র সাধারণ নাগরিকদের জন্যই নাগরিকদের মতামতের ভিত্তিতেই পাবজি এর নানা নেতিবাচক সাইকোসোশ্যাল প্রাযুক্তিক প্রভাবের কারণে এই গেম বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এতে সরকারের ভিন্ন কোনও উদ্দেশ্য নেই। সিদ্ধান্ত কতটুকু যৌক্তিক হয়েছে সেটা সমাজের বিভিন্ন এন্টিটি ঠিক করবে। যুক্তির মাধ্যমে কিছু একাডেমিক আলোচনার আবহ তৈরি হতেই পারে, তবে ভিন্নমত কে সবসময়ই স্বাগত জানাই।'

মূলত বাংলাদেশে পাবজি বন্ধের আলোচনা শুরু হয় চলতি বছরের এপ্রিলে। নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে বন্দুক দিয়ে মসজিদে মুসলমানদের হত্যা এবং সেই দৃশ্য ফেসবুক লাইভের বিষয়টি অনেকেই পাবজির সঙ্গে তুলনা করেন।

চলতি বছরের ১৩ এপ্রিল নেপালে এ পাবজি নিষিদ্ধ করে দেশটির আদালত। একই কারণে ভারতের গুজরাটেও এ গেম খেলার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছিল। এমনকি গেমটি খেলার জন্য কয়েকজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছিল।

২০১৭ সালে চালু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী গেমটি ১০ কোটিরও বেশিবার ডাউনলোড করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।

Post a Comment

0 Comments